অভিজিতের স্ত্রী বন্যার অভিযোগ, হামলার সময় পুলিশ কাছে থেকেও এগিয়ে আসেনি
2015.03.11

অভিজিতের সদ্য বিধবা স্ত্রী রাফিদা আহেমেদ বন্যা বলেছেন, হামলার সময় পুলিশ নীরবে দাঁড়িয়ে ছিলো, কাছে থেকে দেখলেও হামলাকারীদের ঠেকাতে এগিয়ে আসেনি বলে তিনি অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, বিজ্ঞান ও যুক্তির আলোকে ধর্মীয় মৌলবাদীদের সমালোচনা করতেন বলেই তাকে হত্যা করা হয়েছে । বুধবার এএফপিকে দেয়া তার যুক্তরাষ্ট্রের বাসা থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি কথাগুলো উল্লেখ করেছেন।
বন্যা বলেন, “একজন স্ত্রী হিসেবে, লেখকের একজন অনুসারী হিসেবে এবং একজন মুক্ত-মনা হিসেবে আমি এই সন্ত্রাসী হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি”।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে ফেরার পথে টিএসসির মোড় পেড়িয়ে ফুটপাতে সন্ত্রাসীদের চাপাতির আঘাতে নিহত হন অভিজিৎ, তার সাথে থাকা বন্যাকেও আঘাত করা হয়, আহত অবস্থায় ২জনকেই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাস্পাতালে নেয়া হলে ডাক্তার অভিজিৎকে মৃত ঘোষণা করে, আহত বন্যাকে চিকিৎসাধীন রাখা হয়। পরে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়।
বেনার নিউজের পক্ষ থেকে বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত ১১টায় ওয়াশিংটন ডিসি থেকে ফোনে অভিজিৎ রায়ের বাবা অজয় রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। অভিজিতের স্ত্রী বন্যার প্রকাশিত বিবৃতি তিনি দেখেছেন কিনা তার সঙ্গে যোগ করার কিছু আছে কিনা জানতে চাওয়া হলে অজয় রায় বলেন, “ বাংলাদেশের সংবাদপত্রে প্রকাশিত বিবৃতিটি আমি দেখেছি।আমি তার সাথে কিছু যোগ করতে চাই না। আমি শুধু গুরুত্ত আরোপ করবো, হত্যাকারীদের যত শিঘ্র সম্ভব অবশ্যই ধরতে হবে। এফবিআই যেহেতু এই হত্যার তদন্ত কাজে জড়িত হয়েছে, আমাদের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে সাহায্য করছে, তাদের সাহায্য নিয়ে হামলাকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে”।
আপনি কি মনে করেন অপরাধীদের বিচার করে তাদের সাজা দেয়া সম্ভব হবে? এই প্রশ্নে অজয় রায় বলেন, “আমি শুধু মাত্র আশা করতে পারি যে, তাদের কৃতকর্মের বিচার হবে।তারা খুবই ধূর্ত, সহজে খুঁজে বের করা মুশকিল।নিশ্চয়ই ঘটনার কিছু ক্লু রয়ে যায়, তবে এফবিআই দলের সহযোগিতায় আমাদের এজেন্সিগুলো সেই ক্লু অনুসরণ করে তাদেরকে খুঁজে বের করতে সক্ষম হবে এবং বিচারের আওতায় আনতে পারবে বলে বিশ্বাস করি”।
জানতে চাওয়া হয়, আপনি কি মনে করেন আপনার ছেলের লেখালেখির জন্য তাকে হত্যা করা হয়েছে? জবাবে অজয় রায় বনেন, “আমি হত্যাকারিদের মোটিভ জানিনা, তবে তারা ইসলামী মৌলবাদী। তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে একজন ইসলামে অবিশ্বাসীকে তারা মুরতাদ বা কাফের বলে অভিহিত করে। তারা বিশ্বাস করে একজন অবিশ্বাসীকে হত্যা করলে সহজেই বেহেশতে যাওয়া যায়।সেখানকার সব সুযোগ-সুবিধা ও আনন্দ ভোগ করা যাবে।আমার ধারনা এই বিশ্বাস থেকে তারা অভিজিৎকে তার মতামত, উদারচিন্তা ও ধর্মনিরপেক্ষতা বিষয়ক লেখালেখির জন্য খুন করেছে।
তিনি বলেন, যদি আপনারা পারেন, আপনাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আমাদের সরকার এবং আমেরিকার সরকারের উপর চাপ দিন। আমি জানি, আমেরিকার সরকার তাদের নাগরিকদের হত্যাকারীদের খোঁজে তদন্ত করতে বাধ্য, যেখানে তারা খুন হোক না কেনো”।