দুই খুনে বিশ্বব্যাপি প্রতিক্রিয়া, আইএস’র অস্তিত্ব মানেনা সরকার, তদন্তে অগ্রগতি নেই

ঢাকা থেকে শাহরিয়ার শরীফ
2015.10.05
BD-killing ইটালীয় নাগরিক তাবালা সিজার ও জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি ৬ দিন আগে পরে খুন হন। অক্টোবর,২০১৫
বেনার নিউজ

জাপানি নাগরিক কুনিও হোশির হত্যার তদন্ত করতে সোমবার জাপানি পুলিশের ৪-সদস্যের একটি দল ঢাকায় পৌছেছে। জাতি সংঘের ঢাকা কার্যালয় তাদের কর্মকর্তাদের রংপুর সফরে পরবর্তি ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

কুনিও হোশি হত্যাকে কাপুরোষিত আখ্যায়িত করে হত্যাকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জাপান সরকার। এছাড়া জাপান সরকার ওই হত্যাকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রত্যাশা করেছে।

গতকাল সোমবার টোকিওতে এক সংবাদ সম্মেলনে জাপানের মন্ত্রিসভার জাপানের মন্ত্রীসভার চিফ কেবিনেট সেক্রেটারি এবং সরকারে প্রধান মুখপাত্র ইয়োশিহিদে সুগা সরকারের এ অবস্থান তুলে ধরেন।

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) দুই বিদেশি নাগরিক কুনিও হোশি ও তাবালা সিজারকে হত্যার দায় স্বীকার করলেও বাংলাদেশ সরকার তাদের ওই দাবি মানতে রাজি নয়।

তবে কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চললেও তদন্তকারীরা এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি।   


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও সরকারের মন্ত্রী ও সুশীল সমাজের একটি বড় অংশ মনে করছেন, দেশকে অস্থিতিশীল করতে এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করতে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে।

ঢাকায় ইতালীয় নাগরিক তাবেলা সিজারকে হত্যার ছয় দিন পর রংপুরে একই কায়দায় জাপানি নাগরিক কুনিও হোশিকে হত্যা করা হয়। এসব ঘটনায় বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তির বিষয়টি নিয়ে দুশ্চিন্তা সৃষ্টি হয়েছে।

গত শনিবার সকালে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার আলুটারি গ্রামে মুখোশধারীদের গুলিতে নিহত হন কুনিও হোশি, যিনি ওই এলাকায় একটি জমি ইজারা নিয়ে ঘাসের খামার করছিলেন।

জঙ্গি হুমকি পর্যবেক্ষণকারী ওয়েবসাইট ‘সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ’ জানায়, আইএসের এক টুইটে ওই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করা হয়েছে।

এর আগে গত সোমবার ঢাকায় ইতালীয় নাগরিক তাবেলা সিজার খুন হওয়ার পরও আইএস ওই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে।  

জঙ্গি গোষ্ঠীটি আরও হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছে জানিয়ে তাদের টুইট উদ্ধৃত করে রয়টার্স বলেছে, “ধর্মযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী জোটের দেশগুলোর নাগরিকদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে। মুসলমানদের মাটিতে তাদের নিরাপত্তা বা জীবিকা থাকবে না।”


সরকার বলছে আইএস নেই

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান একাধিকবার বলেছেন, বাংলাদেশে আই এস এর কর্মকাণ্ড বা অস্তিত্ব নেই। সে ক্ষেত্রে কিছুদিন পরপর আই এস বা বিভিন্ন নামে জঙ্গি গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা আসলে কারা-সেই প্রশ্ন তুলেছে গণমাধ্যম।

জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একাধিকবার সাংবাদিকদের বলছেন, এরা সন্দেহভাজন। কেউবা সদস্য সংগ্রহের চেষ্টা করেছে, কেউবা উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করেছে। তদন্ত ও বিচারে প্রমাণ হবে তারা প্রকৃত দোষী কিনা।

গতকাল সোমবারও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, এ দেশে আইএর এর অস্তিত্ব নেই। আইএস এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়নি।

তবে আইএস নেই বলে সরকারের এই অন্ধ অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। এর কারণ গত কয়েক বছর ধরে আইএস সন্দেহে গ্রেপ্তারের বেশ কিছু ঘটনা রয়েছে।  

যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের অধ্যাপক  আলী রীয়াজ গতকাল সোমবার জঙ্গি নিয়ে সরকারের এমন স্ববিরোধী অবস্থানের সমালোচনা করে প্রবন্ধ লিখেছেন। এতে  ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত এক বছরে তিনটি (দৈনিক প্রথম আলো, জনকণ্ঠ ও নিউ এজ) সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরগুলো বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন,  এই সময়ে জঙ্গি আটক বিষয়ে ৬৭টি প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে।

এসব খবর অনুযায়ী জঙ্গি সন্দেহে আটকের সংখ্যা ১০০ জন এবং সন্দেহভাজন ১২ জন, যাদের আটক করা যায়নি। এদের মধ্যে জেএমবির সঙ্গে যুক্ত ২৫ জন, আইএসের সঙ্গে যুক্ত বা যুক্ত হতে আগ্রহী ২২, শহীদ হামজা ব্রিগেডের সঙ্গে যুক্ত ১৯ জন, আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সঙ্গে জড়িত ১৪ জন, হরকাতুল জিহাদ বা হুজির সঙ্গে জড়িত ১৩ জন এবং বাংলাদেশ জিহাদ গ্রুপের সঙ্গে জড়িত ১১ জন।

“বাংলাদেশে আইএসের উপস্থিতি এবং এই হত্যাকাণ্ড বিষয়ে দেওয়া কথিত বিবৃতি বিষয়ে যাঁরা সংশয়ী, আমি তাঁদের সঙ্গে একমত। কিন্তু বাংলাদেশে বিদেশি জঙ্গিদের উপস্থিতি বা তার আশঙ্কাকে যাঁরা এক কথায় নাকচ করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন, আমি তাঁদের সঙ্গে একমত হতে অপারগ,” ওই প্রবন্ধে মত দেন আলী রীয়াজ।

যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন, গত দুই দশকে বাংলাদেশে জঙ্গি কার্যক্রমের একটা ইতিহাস আছে এবং সেখানে বিভিন্নভাবেই বিদেশি যোগাযোগের প্রমাণ উপস্থিত।


পাঁচ জেএমবি সদস্য আটক

এদিকে, দেশে বিদেশি হত্যার অস্থিরতার মধ্যে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন জামায়াতুল মোজাহিদিন বাংলাদেশের(জেএমবি) গোপন আস্তানায় অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রামের সামরিক শাখার প্রধানসহ পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। এসময় সময় তাদের কাছ থেকে নয়টি হ্যান্ড গ্রেনেড, ১২০ রাউন্ড গুলি, একটি পিস্তল ও ১০টি ছোরা উদ্ধার করা হয়।

সোমবার সন্ধ্যায় চলা এ অভিযানে আটকৃতরা হলেন সামরিক শাখার প্রধান মো. জাবেদ(২৪), জেএমবি সদস্য বুলবুল আহমেদ(২৬) মো. সুজন ওরফে বাবু(২৫), মাহবুব ও সোহেল।


রাজনৈতিক তীর বিরোধীদের দিকে

সরকার দলীয় নেতাদের অনেকেই আরও অস্থিরতা সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন।

“একের পর এক যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি হচ্ছে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং তাঁর ছেলে তারেক রহমানের মামলার রায় হবে কিছুদিনের মধ্যে। তাঁরা আন্দোলন করতে ব্যর্থ হয়ে ‘মরণকামড়’ দেওয়ার চেষ্টা করবে,” বেনারকে জানান পাট ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, যিনি সরকারি দল আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও গত রবিবার সংবাদ সম্মেলন করে বিদেশি নাগরিক হত্যায় বিএনপি-জামায়াতের মদদ থাকার কথা বলেছেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিয়ে দেশে ফেরার পর গত রোববার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, “এ ঘটনার পেছনে নিশ্চয়ই তাদের মদদ আছে। আমাদের অর্জনগুলো ম্লান করার জন্য এ ঘটনাগুলো ঘটানো হয়। এটার পেছনে নিশ্চয়ই একটা উদ্দেশ্য আছে। তাদের হাত আছে।”


বিএনপি বলল ‘দায়িত্বহীন উক্তি’

সরকার প্রধানের এই অভিযোগের জবাবে  গত রোববার বিএনপি বলেছে,  বিদেশি নাগরিক হত্যার ঘটনা নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের নেতাদের দায়িত্বহীন উক্তি তদন্তে বাধা সৃষ্টি করবে । এতে প্রকৃত আততায়ীকে চিহ্নিত করতেও বাধার সম্মুখীন হতে হবে।

“এ ধরনের হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করে যে বর্তমানে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অত্যান্ত নাজুক। সরকারের উচ্চপর্যায়ের নেতৃবৃন্দের দায়িত্বহীন উক্তি কেবলমাত্র তদন্তেই ব্যাঘাত সৃষ্টি করবে না, বরং প্রকৃত আততায়ীকে চিহ্নিত করতেও বাধার সম্মুখীন হতে হবে,” গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা বলেন।

“এ ধরনের স্পর্শকাতর বিষয় যখন তদন্তের পর্যায়ে থাকে, তখন এ ধরনের মন্তব্য অত্যন্ত অনভিপ্রেত। শাসক দলের প্রধানের কাছ থেকে আমরা অবশ্যই দায়িত্বশীল মন্তব্য আশা করি,” বেনারকে জানান বিএনপির মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন।


প্রভাব পড়বে উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে

সরকারি দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত একাধিক শীর্ষ ও মধ্যম সারির নেতারা একবাক্যে বলছেন, দুটি ঘটনাই পরিকল্পিত। উন্নয়ন ও অগ্রগতির ক্ষেত্রে এর প্রভাব নিয়ে তাঁরা উদ্বিগ্ন।

নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল বাংলাদেশ সফর বাতিল করায় ক্রিকেটপ্রেমী কোটি কোটি মানুষের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। সর্বশেষ সফর স্থগিত করল দক্ষিণ আফ্রিকার নারী ক্রিকেট দলও। এর আগে গার্মেন্টসের বিদেশি একটি বায়ার দলও সফর স্থগিত করেছে। এরই মধ্যে দুই বিদেশি হত্যাকাণ্ডের পর সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে পর্যটকদের উপস্থিতি কমে গেছে।

বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশিদের ভীতি বেড়েছে। অনেক বিদেশি সফর বাতিল করেছে বা সফর সংক্ষিপ্ত করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশ তাদের নাগরিকদের চলাফেরার ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

“এসব ঘটনার পর যে প্রশ্নটি উঠেছে-বাংলাদেশ কী এতই অনিরাপদ যে মানুষ এখানে আসতে পারবে না? হয়তো এটাই প্রমাণ করার চেষ্টা হচ্ছে সবার সামনে,” বেনারকে জানান বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, যিনি সরকারি জোটের শরিক সংগঠন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি।


“দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে কুচক্রীরা বিদেশি নাগরিকদের হত্যার এ নতুন কৌশল বের করেছে,” বেনারকে জানান সব্যসাচি লেখক সৈয়দ শামসুল হক।


“বাংলাদেশে কারা এই ঘটনা ঘটাল সেটার তদন্ত চলছে। কারা এই কাজ করেছে সেটি অবশ্যই খুঁজে বের করা হবে। সরকার সতর্ক আছে, যাতে এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটে। এ জন্য সব ধরনের ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে,” জানান ওবায়দুল কাদের, যদি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য।


প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বলেছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে দুই বিদেশি হত্যার ঘটনা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারের ‘ব্যর্থতারই প্রমাণ’।


“আমরা দেখতে পাচ্ছি, শুধু দেশের সাধারণ মানুষই নয়, বিদেশিরাও নিরাপদ নয় । এর ফলে আন্তর্জাতিক মহলে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।”


তদন্তে অগ্রগতি নেই

তিন দিনেও রংপুরে জাপানি নাগরিক হোশি কুনিওর কোনো খুনিকে চিহ্নিত কিংবা গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ ।

“বলার মতো কোনো অগ্রগতি নেই,” সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সোমবার এ কথা বলেন পুলিশের রংপুর রেঞ্জের পুলিশের ভারপ্রাপ্ত ডিআইজি হুমায়ুন কবির ।

ঢাকায় ইতালির নাগরিক সিজার হত্যাকাণ্ডের ছয় দিন পর গত ২ অক্টোবর রংপুরে খুন হন জাপানি নাগরিক কুনিও। সিজারের খুনিদের কাউকেও এখন পর্যন্ত ধরতে পারেনি পুলিশ।

সিজারের মতোই গুলি চালিয়ে কুনিওকে হত্যা করে মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।


এদিকে, দুই বিদেশি নাগরিক হত্যার প্রেক্ষিতে সরকার মঙ্গলবার কূটনীতিকদের ব্রিফ করবেন। ঢাকায় ইতালির নাগরিক তাবেলা সিজার ও রংপুরে জাপানের নাগরিক কুনিও হোশিকে হত্যার পর সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হচ্ছে। সরকারের পক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী ব্রিফ করবেন।



মন্তব্য করুন

নীচের ফর্মে আপনার মন্তব্য যোগ করে টেক্সট লিখুন। একজন মডারেটর মন্তব্য সমূহ এপ্রুভ করে থাকেন এবং সঠিক সংবাদর নীতিমালা অনুসারে এডিট করে থাকেন। সঙ্গে সঙ্গে মন্তব্য প্রকাশ হয় না, প্রকাশিত কোনো মতামতের জন্য সঠিক সংবাদ দায়ী নয়। অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন এবং বিষয় বস্তুর প্রতি আবদ্ধ থাকুন।