বর্ষবরণের দিনে যৌন হয়রানির এক ঘণ্টার ভিডিও পুলিশের হাতে
2015.04.17

বাংলা নববর্ষের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যৌন হয়রানির সঙ্গে জড়িত উচ্ছৃঙ্খল তরুণেরা চিহ্নিত হতে যাচ্ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ একটি ভিডিওচিত্র সংগ্রহ করেছে, যা পুলিশের সিসি ক্যামেরা সেদিন ধারণ করে।
১৪ এপ্রিল বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেটে সন্ধ্যা ৬ টা ২২ মিনিট থেকে ৭ টা ২২ মিনিট পর্যন্ত ওই ভিডিওটি এই প্রতিবেদকের কাছেও এসেছে। এতে দেখা যায়, কয়েকজন তরুণ ঘুরেফিরে নারীদের উত্ত্যক্ত করছে। তাদের মুখে দাঁড়ি, পরনে পাঞ্জাবি।
নিপীড়নকারীদের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়ন শাখার সভাপতি লিটন নন্দীর কথা-কাটাকাটি ও একপর্যায়ে পড়ে যাওয়ার দৃশ্য রয়েছে ভিডিওটিতে। এমনটি নিপীড়নকারীদের হাতে লিটনের মার খাওয়ার দৃশ্য রয়েছে। এ ছাড়া ওই সব তরুণ কীভাবে নারীদের ঘিরে ধরে উত্ত্যক্ত করছে তারও ধারাবাহিক চিত্র পাওয়া যায় সেখানে।
“ঘটনাটি ছিল পরিকল্পিত। ভিডিও পাওয়ায় এখন পুলিশ নিঃসন্দেহে কারা জড়িত ছিল তা বের করতে পারবে,” বেনারকে জানান লিটন নন্দী।
এ ঘটনায় দেশজুড়ে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে ছাত্র, নারী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর মধ্যে। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ১৬ এপ্রিল রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। শনি ও রবিবার বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ছাত্র সংগঠন ইতিমধ্যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
“ঘটনাস্থলে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় পাওয়া এক ঘণ্টার ভিডিও দেখা হচ্ছে। দ্রুত দুষ্কৃতকারীরা চিহ্নিত হবে এবং তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে,” জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম ও জনসংযোগ) জাহাঙ্গীর আলম সরকার।
এক প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, ঘটনাটি পরিকল্পিত বলেই মনে হচ্ছে। পয়লা বৈশাখ পছন্দ করে না, এমন কোনো গোষ্ঠী হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যায়। তবে তদন্ত শেষ করে পুলিশ এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবে।
এদিকে অপ্রীতিকর যৌন হয়রানির অভিযোগ সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি তদন্ত শুরু করেছে।
“তদন্তের স্বার্থে এ সম্পর্কে প্রত্যক্ষদর্শীর প্রামাণিক কোনো তথ্য থাকলে তা কমিটির আহ্বায়ক প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ এর দপ্তরে লিখিতভাবে ২৩ এপ্রিলের মধ্যে জমা দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে,” বেনারকে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
ঘটনায় তদন্তে সহায়তার জন্য ১৭ এপ্রিল তথ্য চেয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশও। ডিএমপির অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে তথ্য আহ্বান করা হয়।
সেখানে বলা হয়, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসি মোড় সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রবেশ পথে কথিত অপ্রীতিকর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তথ্য প্রদানের জন্য সম্মানিত নগরবাসীর সহযোগিতা কামনা করছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। তাই উক্ত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সংশ্লিষ্ট যেকোনো তথ্য (স্থিরচিত্র, ভিডিও ফুটেজ, রেকর্ড/দালিলিক প্রমাণাদি) যদি কারও কাছে থাকে তা প্রদানের জন্য নিচের ঠিকানায় যোগাযোগের জন্য অনুরোধ করা গেল।”
তথ্য প্রদানকারীর পরিচয় গোপন রাখার আশ্বাস দিয়েছে ডিএমপি। যোগাযোগের ঠিকানা: উপ-পুলিশ কমিশনার (রমনা) ০১৭১৩-৩৭৩১২০, উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) ০১৭১১৬০৫১৪৯, অতিঃ উপ-পুলিশ কমিশনার (রমনা) ০১৭১৩-৩৭৩১২১, সহকারী পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) ০১৭১১৬০৫১৪৫, অফিসার ইনচার্জ, শাহবাগ থানা ০১৭১৩-৩৭৩১২৭, www.dmpmediacell@gmail.com