সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাস আক্রান্ত বাংলাদেশির ঘনিষ্ঠ ১৯ জনকে বিচ্ছিন্ন করেছে কর্তৃপক্ষ
2020.02.10
ওয়াশিংটন ডিসি

সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কায় সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাস আক্রান্ত বাংলাদেশি শ্রমিকের ঘনিষ্ঠ ১৯ জনকে বিচ্ছিন্ন (কোয়ারেন্টাই) করে রাখা হয়েছে বলে সোমবার জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এক বিবিৃতিতে মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় জানায়, “ওই শ্রমিকের সাথে ঘনিষ্ঠ সকলকেই বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।”
সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ৩৯ বছর বয়স্ক ওই বাংলাদেশি শ্রমিকের করোনাভাইরাস আক্রান্ত হবার ঘটনা রোববার নিশ্চিত করে। তবে ওই শ্রমিকের নাম বা অন্য কোনো পরিচয় প্রকাশ করেনি সিঙ্গাপুর।
“গত দুই দিনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মোট ১৯ জনকে বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ জারি করেছে। যার মধ্যে রয়েছেন ওই শ্রমিকের সাথে একই ঘরে বসবাসকারী ১০ জন, তাঁর সাথে কোম্পানির একই গাড়িতে যাতায়াত করা ৮ জন এবং তাঁর কর্মক্ষেত্রের এক প্রকল্প ব্যবস্থাপক,” বলা হয় বিবৃতিতে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ওই বাংলাদেশির যাতায়াত তাঁর কর্মস্থল ও আবাসস্থলের মধ্যেই সীমাবন্ধ ছিল বলেও জানানো হয় বিবৃতিতে।
এতে জানানো হয়, কর্মক্ষেত্রে তিনি অসুস্থ বোধ করার সাথে সাথে তাঁর নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ তাঁকে কাজ থেকে সরিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষার আয়োজন করে।
সিঙ্গাপুরের ওই ৩৯ বছর বয়স্ক শ্রমিকই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম বাংলাদেশি। এর বাইরে বাংলাদেশের ভেতরে বা বাইরে কোনো বাংলাদেশির আক্রান্ত হওয়ার সংবাদ পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া এই ঘাতক ব্যাধিতে সোমবার পর্যন্ত চীনে ৪০ হাজার ২৩৫ জন আক্রান্ত ও ৯০৯ জন মারা গেছেন বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
চীনের বাইরে গত ২ ফেব্রুয়ারি ৪৪ বছর বয়স্ক এক চীনা নাগরিক ফিলিপাইনে মারা যান।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে চীন ছাড়া আরো ২৪টি দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৩১৯।
গত ১ ফেব্রুয়ারি উহান থেকে ৩১২ জন নাগরিককে ফিরিয়ে নিয়ে আসে বাংলাদেশ। বর্তমানে তাঁরা আশকোনার হজ ক্যাম্পে ১৪ দিনের জন্য বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন।
তবে বাংলাদেশ বিমানের কোনো পাইলট ও ক্রু উহানে যেতে রাজি না হওয়ায় সেখানে থেকে যাওয়া আরো ১৭১ জন বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে গত শনিবার ঢাকায় সাংবাদিকদের জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
উহান থেকে প্রথম কিস্তিতে বাংলাদেশিদের নিয়ে আসা বিমানের কর্মীরাও বর্তমানে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ওই ১৭১ জনকে চীনের কোনো ভাড়া করা বিমানে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে সেক্ষেত্রেও চীনা কর্তৃপক্ষ আপাতত অনুমতি দিচ্ছে না।
উহানে থাকা বাংলাদেশিদের খাদ্য সরবরাহের বিষয়টি চীনা কর্তৃপক্ষ দেখাশোনা করছে। এছাড়া চীনের বাংলাদেশ দূতাবাস নিয়মিত তাঁদের সাথে যোগাযোগ রাখছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এদিকে চীনে থাকা বাংলাদেশিদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি বলে গত ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে জানান বাংলাদেশে চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।