সিরিয়ার ভূমিকে ইসরায়েলের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি: বাংলাদেশের উদ্বেগ

জেসমিন পাপড়ি
2019.03.27
ঢাকা
190327_MOFA_Syrian_Golan_1000.jpg দখলকৃত গোলান মালভূমিকে ইসরায়েলের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতির প্রতিবাদে গোলানের সিরিয়া অংশের কুনেইত্রা এলাকায় স্থানীয়দের বিক্ষোভ। ২৬ মার্চ ২০১৯।
[এএফপি]

সিরিয়ার গোলান মালভূমি এলাকাকে ইসরায়েলের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র স্বীকৃতি দেওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।

বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনাটিকে “জাতিসংঘ সনদ, আন্তর্জাতিক আইনের মূলনীতির পরিষ্কার লঙ্ঘণ” বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এতে বলা হয়, নিরাপত্তা পরিষদকে পাশ কাটিয়ে দখলকৃত গোলান উপত্যকাকে ইসরায়েলের অংশ হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার ঘটনাকে জাতিসংঘের সিদ্ধান্তের সরাসরি লঙ্ঘণ বলে মনে করে বাংলাদেশ।

বিবৃতিতে নিরাপত্তা পরিষদের আরব শান্তি উদ্যোগ রোডম্যাপ অনুযায়ীই মধ্যপ্রাচ্য সমস্যা সমাধানের পক্ষে বাংলাদেশের নীতিগত অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন বেনারকে বলেন, “দখলকৃত সিরিয়ার গোলান হাইটস এলাকাকে ইসরাইলের সার্বভৌম এলাকা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে অত্যন্ত নিন্দনীয় কাজ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির এই ঘোষণা পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে আরো অস্থিতিশীল করে তুলবে।”

তিনি বলেন “এর মাধ্যমে মূলতঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের আগ্রাসনকে বৈধতা দিলো। বলা যায়, প্যালেস্টাইনদের সমস্যাকে আরো বেশি জটিল করা এবং তাদের অধিকারকে একেবারেই জলাঞ্জলি দেওয়া হলো। ফলে এটি প্রচণ্ড রকম ক্ষোভ তৈরি করবে প্যালেস্টাইন বা মুসলিমদের মধ্যে।”

“মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ সঠিক কাজটি করেছে,” মন্তব্য করে ড. দেলোয়ার বলেন, “বাংলাদেশ নয় শুধু জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ, সংস্থারও এ বিষয়ে নিন্দা জানানো উচিত, এবং সেটি হয়ত করবেও।”

প্রায় ১৮০০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের গোলান মালভূমি সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক থেকে ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় এলাকাটির তিন ভাগের দুই ভাগ দখল করে নেয় ইসরায়েল।

এরপর গোলানে ইহুদি বসতি স্থাপন ও ১৯৮১ সালে ওই এলাকায় নিজেদের আইন বলবৎ করে ইসরায়েল। বর্তমানে গোলান উপত্যকায় প্রায় ২০ হাজার ইহুদি বসবাস করছেন।

সিরিয়া শুরু থেকেই থেকেই এলাকাটি ফেরত পাওয়ার দাবি জানিয়ে এসেছে। জাতিসংঘসহ কোনো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গোলানকে ইসরায়েলের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি।

গত সোমবার প্রথমবারের মতো গোলান উপত্যকাকে ইসরায়েলের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেডিডেস্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে সিরিয়া। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে।

জাতিসংঘ ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন জানিয়েছে, গোলান উপত্যকা সম্পর্কে সংস্থাগুলোর অবস্থান আগের মতোই রয়েছে। অর্থাৎ সংস্থাগুলো গোলান এলাকাটিকে ইসরায়েলের অংশ হিসেবে স্বীকার করে না।

তবে ইসরায়েল স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের এই স্বীকৃতিকে।

মন্তব্য করুন

নীচের ফর্মে আপনার মন্তব্য যোগ করে টেক্সট লিখুন। একজন মডারেটর মন্তব্য সমূহ এপ্রুভ করে থাকেন এবং সঠিক সংবাদর নীতিমালা অনুসারে এডিট করে থাকেন। সঙ্গে সঙ্গে মন্তব্য প্রকাশ হয় না, প্রকাশিত কোনো মতামতের জন্য সঠিক সংবাদ দায়ী নয়। অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন এবং বিষয় বস্তুর প্রতি আবদ্ধ থাকুন।