বিএনপিকে আগামী নির্বাচনে আনতে কোনো উদ্যোগ নেবে না সরকার

কামরান রেজা চৌধুরী
2017.12.07
ঢাকা
কম্বোডিয়া সফর থেকে ফিরে গণভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কম্বোডিয়া সফর থেকে ফিরে গণভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৭ ডিসেম্বর ২০১৭।
ফোকাসবাংলা

প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে আগামী নির্বাচনে আনতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক উদ্যোগ নেবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার গণভবনে তাঁর সদ্য সমাপ্ত কম্বোডিয়া সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে বলেন, “এমন কোনো দৈন্যদশা সরকারের হয়নি যে আগাম নির্বাচন দিতে হবে।”

এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদা সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন কমিশন আগাম নির্বাচন করতে প্রস্তুত রয়েছে। সেই সূত্র ধরেই প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়, আওয়ামী লীগ আগাম নির্বাচন ঘোষণা করবে কিনা।

আগামী নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হবে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে শেখ হাসিনা এক্ষেত্রে সরকারের কিছু করার নেই বলে মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, “গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রত্যেক দলের কর্তব্য। যে দল গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, দলে গণতন্ত্রের চর্চাও করে না, তারা নির্বাচনে আসবে কিনা সেটা তাদের সিদ্ধান্ত। এখানে আমাদের কিছু করার নাই।”

নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচনে যাব না- এই ঘোষণা দিয়ে বিএনপি গত দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকে। আওয়ামী লীগ বিনা বাধায় ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে।

সেই নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে ফোন করে গণভবনে দাওয়াতও দিয়েছিলেন।

সেই অভিজ্ঞতা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, “২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ওনাকে (খালেদা জিয়া) ফোন করে যে ঝাড়ি খেলাম, আর অপমানিত হওয়ার ইচ্ছা নাই। তারা নির্বাচন করবে কিনা সেটা তাদের বিষয়।”

“তবে তারা এবার নাকে খত দিয়ে নির্বাচনে আসবে বলে মনে করি," বলেন শেখ হাসিনা।

গণমাধ্যমের ওপর ক্ষোভ

প্রতিপক্ষের রাজনীতি প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমের ওপরও ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি সৌদি আরবে খালেদা জিয়ার শপিংমল ও সম্পদের ব্যাপারে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে কোনো সংবাদ প্রকাশিত না হওয়ার সমালোচনা করেন।

“আপনাদের (সাংবাদিকদের) কোনো আগ্রহ দেখলাম না এ সংবাদ প্রকাশের জন্য। তাদের কি সাত খুন মাফ? হতে পারে তাদের হাজার কোটি টাকা আছে। কীভাবে মুখ বন্ধ রাখতে হয় তারা ভালো করে জানে,” বলেন হাসিনা।

তিনি বলেন, “এমন ঘটনা আমার বিরুদ্ধে হলে সবাই আমার ও আমার পরিবার নিয়ে লেখা শুরু করত।”

তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে। সে তো সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তাকে অবশ্যই দেশে আসতে হবে। বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।"

রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ যথেষ্ট আন্তর্জাতিক সমর্থন পাচ্ছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান প্রধানমন্ত্রী।

“আশিয়ান সদস্যভুক্ত দেশগুলো মিয়ানমারের ওপর চাপ দিচ্ছে। কেউ প্রকাশ্যে না বললেও রোহিঙ্গা ইস্যুটি কেউ ভালো চোখে দেখেননি। তারা চান, রোহিঙ্গারা মিয়ানমার ফেরত যাক। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফেরত নিক,” বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের মানবিক কারণে এ দেশে আশ্রয় দিয়েছে।

“মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশি রাষ্ট্র। প্রতিবেশীর সঙ্গে ভাব থাকুক সেটাই চাই,” বলেন প্রধানমন্ত্রী।

মন্তব্য করুন

নীচের ফর্মে আপনার মন্তব্য যোগ করে টেক্সট লিখুন। একজন মডারেটর মন্তব্য সমূহ এপ্রুভ করে থাকেন এবং সঠিক সংবাদর নীতিমালা অনুসারে এডিট করে থাকেন। সঙ্গে সঙ্গে মন্তব্য প্রকাশ হয় না, প্রকাশিত কোনো মতামতের জন্য সঠিক সংবাদ দায়ী নয়। অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন এবং বিষয় বস্তুর প্রতি আবদ্ধ থাকুন।