বঙ্গোপসাগরে কার্গো বিমান দুর্ঘটনায় ইউক্রেনের তিন নাগরিক নিহত

ঢাকা থেকে শাহরিয়ার শরীফ
2016.03.09
BD-crash কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে থেকে উড্ডয়নের কয়েক মিনিট পর চার আরোহী নিয়ে উড়োজাহাজটি বঙ্গোপসাগরের নাজিরারটেক পয়েন্টে বিধ্বস্ত হয়।
ফোকাস বাংলা

কক্সবাজারে একটি বেসরকারি পরিবহন সংস্থার কার্গো বিমান দুর্ঘটনায় তিন বিদেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন, যাদের একজন  ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার ও দুজন ক্রু। কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে থেকে উড্ডয়নের কয়েক মিনিট পর চার আরোহী নিয়ে উড়োজাহাজটি  বঙ্গোপসাগরের নাজিরারটেক পয়েন্টে বিধ্বস্ত হয়।


গুরুতর আহত অবস্থায় অপর ক্রু গাটারভ ওয়াদকে(৪৭) উদ্ধার করে হাসপাতালে ভতি করা হয়েছে । স্থানীয় জেলা ও পুলিশ প্রশাসন নিশ্চিত করেছে,  হতাহত সবাই ইউক্রেনের নাগরিক।


এএন-২৬ মডেলের ওই উড়োজাহাজটি কক্সবাজার ও যশোরের মধ্যে চিংড়ি পোনা পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হতো।  কার্গো বিমান প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেন কক্সবাজারের মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক।


দুর্ঘটনায় পড়া ওই বিমানে চিংড়ি পোনা ভর্তি ৯৭২টি বাক্স ছিল। উড্ডয়নের ৫ মিনিটের মাথায় টাওয়ারের সঙ্গে বিমানটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।


তবে কী কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।


”যান্ত্রিক দুর্ঘটনার কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হতে পারে,” মনে করেন কক্সবাজার বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক সাধন কুমার মোহন্ত।


নিহতরা হলেন ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার  কুশি নোলরির (৪০), নেভিগেটর কারতুরভ(৪৫) ও কো-পাইলট জুলদিমির(৩৮)।


সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে যশোর যাওয়ার পথে ট্যুর এভিয়েশন নামের এই কার্গো বিমান বিধ্বস্ত হয়। প্রায়  দেড়ঘণ্টার চেষ্টায় স্থানীয় জনতা ও জেলেদের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর সদস্যরা দুইজনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন, যাদের একজন পরে মারা যান। পরে বিকালে আরও  দুইজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।


”খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিস টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করে,”  টেলিফোনে বেনারকে জানান কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মো. জসীমউদ্দিন।

তিনি জানান,  কক্সবাজার সৈকত থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে সাগরে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।  স্থানীয় জেলেরাই প্রথমে উদ্ধার কাজ শুরু করেন।

স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর আকতার কামাল সাংবাদিকদের জানান, বিমানটির লেজের একটি অংশ পানির উপরে ভাসছিল। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাগরে ভাটা শুরু হলে বিমানটি ঘটনাস্থল থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে সরে যায়। এ কারণে উদ্ধার কাজ ব্যাহত হয়।


বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সকাল ৯টা ৫ মিনিটে চিংড়ির পোনা নিয়ে ট্রু অ্যাভিয়েশন নামের একটি কার্গো বিমান কক্সবাজার থেকে যশোরের উদ্দেশে রওনা হয়। কিন্তু ওড়ার পরপরই বিমানটি জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে এবং যশোরযাত্রা বাতিল করে কক্সবাজারে অবতরণ করবে বলে রেডিও বার্তা পাঠায়।


বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে কক্সবাজার টাওয়ারের সঙ্গে বিমানটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে জানা যায়, বিমানবন্দর থেকে ১০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে বিমানটি নাজিরহাট ও সোনাদিয়া দ্বীপের কাছে এটি বিধ্বস্ত হয়।


কক্সবাজার সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সোলতান আহমেদ সিরাজী সাংবাদিকদের জানান, জীবিত গাটারভ ওয়াদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। শরীরে গুরুতর আঘাত পাওয়া ওই বিদেশীকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

নীচের ফর্মে আপনার মন্তব্য যোগ করে টেক্সট লিখুন। একজন মডারেটর মন্তব্য সমূহ এপ্রুভ করে থাকেন এবং সঠিক সংবাদর নীতিমালা অনুসারে এডিট করে থাকেন। সঙ্গে সঙ্গে মন্তব্য প্রকাশ হয় না, প্রকাশিত কোনো মতামতের জন্য সঠিক সংবাদ দায়ী নয়। অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন এবং বিষয় বস্তুর প্রতি আবদ্ধ থাকুন।