খালেদা জিয়া আদালতে হাজির না হলে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
2016.05.19

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আগামী ২ জুন আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বিচারক বলেছেন, ওইদিন তিনি উপস্থিত না হলে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হবে ।
সাবেক ওই প্রধানমন্ত্রী আদালতে হাজির না হওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার এ মামলায় তার আত্মপক্ষ সমর্থন পঞ্চমবার পিছিয়ে যায়। এর আগে গত ৭, ১৭ ও ২৫ এপ্রিল এবং ৫ মে চার দফা আবেদন জানিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের সময় নেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী।
বিরোধী দল বিএনপি বলছে, সরকার খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার ষড়যন্ত্র করছে। এ জন্য ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় তাঁকে একের পর এক আসামি করা হচ্ছে।উল্লেখ্য, তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের প্রায় ২০টি মামলা রয়েছে।
জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার প্রধান আসামি খালেদা জিয়া। গতকাল এ মামলায় খালেদা জিয়ার হাজির হয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য দিন ধার্য ছিল।তবে তিনি অসুস্থতাজনিত কারণে আদালতে হাজির হতে পারেননি জানিয়ে তাঁর পক্ষে সময় চেয়ে আবেদন করেন আইনজীবীরা।
“একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধী দলের নেতা হিসেবে তিনি আদালতকে শ্রদ্ধা দেখাচ্ছেন না। এ জন্য বৃহস্পতিবারই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়া হয়েছিল,” বেনারকে জানান দুর্নীতি দমন কমিশন—দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল।
“এটা সবাই জানে উনি অসুস্থ। অসুস্থতার জন্য তিনি হাজির হতে পারছেন না,” বেনারকে জানান খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া।এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২ জুন তিনি আদালতে হাজির হবেন কিনা, তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।
জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট ও জিয়া দাতব্য ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা দুটি মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলছে রাজধানীর বকশি বাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজের অস্থায়ী এজলাসে। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১০ সালে তেজগাঁও থানায় এই মামলা করে দুদক। ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি খালেদা জিয়াসহ চার জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
মামলার অন্য আসামি হলেন; খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএ-এর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক। জামিনে থাকা জিয়াউল ইসলাম ও মনিরুল ইসলাম খান আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন।
খালেদাকে রাজনীতি থেকে সরানোর চেষ্টা
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দ্রুত শেষ করতে সরকারের চেষ্টাকে সন্দেহের চোখে দেখছে বিএনপি।অভিযোগ উঠেছে, তাঁকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার চেষ্টা হচ্ছে।দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৃহস্পতিবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন।মির্জা ফখরুল বলেন, “ঢাকা মহানগর শুধু নয়, গোটা দেশজুড়ে হাজার হাজার মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের নেতা–কর্মীদের রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখার প্রক্রিয়া সরকার গ্রহণ করেছে।”
“এই রকম অসহনীয় পরিস্থিতিতে আমরা বাস করছি। আজকে আমরা মিলাদ মাহফিল, প্রতিবাদ সভা বা জনসভা করার জায়গা পাই না,” বলেন ফখরুল।তাঁর মতে, এখন বসে থাকলে চলবে না, সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে, নেতা–কর্মীদের সংগঠিত হতে হবে।