অনলাইন শিক্ষা বিষয়ক ‘টেন মিনিটস স্কুল’র প্রতিষ্ঠাতা আয়মান সাদিককে হত্যার হুমকি

কামরান রেজা চৌধুরী
2020.07.06
ঢাকা
200706_Aayman_620.jpg অনলাইন শিক্ষার প্লাটফরম ‘টেন মিনিটস স্কুল’র প্রতিষ্ঠাতা আয়মান সাদিককে হত্যার হুমকি সংক্রান্ত সংবাদ নিজের মোবাইলে পড়ছেন ঢাকার একজন পাঠক। ৬ জুলাই ২০২০।
[বেনারনিউজ]

বাংলাদেশের বৃহৎ অনলাইন শিক্ষার প্লাটফরম ‘টেন মিনিটস স্কুল’র প্রতিষ্ঠাতা আয়মান সাদিককে অনলাইনে হত্যার হুমকি দেওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ। কোনো জঙ্গি গোষ্ঠী এই হুমকির পেছনে থাকতে পারে বলে পুলিশ কর্মকর্তাদের ধারণা।

“এই হুমকির ব্যাপারে পুলিশ নজরদারি ও খোঁজখবর নিতে শুরু করেছে,” বেনারকে জানিয়েছেন কাউন্টার টেররিজম শাখার উপ কমিশনার সাইফুল ইসলাম।

ওয়েবসাইট, ফেসবুক ও অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিদিন প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থীকে বিনা মূল্যে শিক্ষা দেয় টেন মিনিটস স্কুল।

“স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে টেন মিনিটস স্কুলটি জনপ্রিয়। বিশেষ করে করোনাকালে শিক্ষার্থীরা অনলাইন এই প্লাটফরমের সহায়তা নিয়ে উপকৃত হচ্ছে, বেনারকে জানান ঢাকার গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী এস বি আহসান।

পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইমের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, টেন মিনিটস স্কুল ও এর প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে একটি ভিডিও তৈরি করে তা অনলাইনে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

“আমরা গত পরশু দেখতে পাই যে আয়মান সাদিক ও টেন মিনিটস স্কুলকে হুমকি দিয়ে বেশ কিছু ভিডিও তৈরি করা হয়েছে। আমরাই মূলত ভিডিওগুলো দেখে তাঁর সাথে যোগাযোগ করেছি,” জানান সাইফুল ইসলাম।

তিনি জানান, স্কুলের কিছু কিছু খণ্ড খণ্ড বক্তব্য জোড়া দিয়ে করা ভিডিওতে বলা হয়েছে এই স্কুল ও তার প্রতিষ্ঠাতা আয়মান সাদিক এলজিবিটি (সমকামীদের) অধিকার প্রোমোট করছে।”

সাইফুল ইসলাম বলেন, “সুনির্দিষ্টভাবে বলা না গেলেও এটি জঙ্গি গোষ্ঠীর কাজ হতে পারে। কারণ, এলজিবিটি অধিকারের বিরুদ্ধে এ দেশে সোচ্চার আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশ এবং জেএমবি। তবে সুনির্দিষ্টভাবে কারা এই ভিডিওগুলো তৈরি করে ছড়িয়েছে তা তদন্ত করে বের করার চেষ্টা চলছে।”

এর আগে ২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল কলাবাগানে নিজ বাসায় জঙ্গি গোষ্ঠী আনসার আল ইসলামের সদস্যদের হাতে খুন হন ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডির কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান ও তাঁর বন্ধু নাট্যকর্মী মাহবুব রাব্বী তনয়।

গত বছরের জানুয়ারিতে ওই হত্যা মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশ। এরপর মামলার খুব একটা অগ্রগতি নেই।

সাইফুল ইসলাম বলেন, “ফেসবুকের একটি পেজ থেকে আয়মানের বিরুদ্ধে ভিডিওটি আপলোড করা হয়েছে। সেখানে টেন মিনিটস স্কুলের বিরুদ্ধে শ্রোতা ও দর্শকদের খেপিয়ে তোলার চেষ্টা রয়েছে।”

আয়মান সাদিকের সাথে কয়েক দফা যোগাযোগ করার চেষ্টা করা সত্ত্বেও তা সম্ভব হয়নি। তবে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন উপায়ে তাঁর বক্তব্য তুলে ধরার চেষ্টা করছেন।

রোববার আয়মান সাদিক তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে একটি ভিডিও আপলোড করেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, “ফেসবুক, ইউটিউব, সব জায়গায় আমাকে মেরে ফেলার জন্য বলা হচ্ছে, টেন মিনিটস স্কুলের অনেককে মেরে ফেলার জন্য বলা হচ্ছে। টেন মিনিটস স্কুলকে বয়কট করার জন্য বলা হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “এই স্কুলে আছে ১৭ হাজার ৪৪০টি ভিডিও টিউটোরিয়াল। প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষা, সফটওয়্যার ও প্রফেশনাল স্কিল বিষয়ক এই ভিডিওগুলো বিনা মূল্যে দেখা যায়।”

মোবাইল ফোন কোম্পানি রবির সহায়তায় পরিচালিত টেন মিনিটস স্কুল এশিয়া প্যাসিফিক আইসিটি অ্যালায়েন্ট অ্যাওয়ার্ডস, বাংলাদেশ ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড, ব্র্যাক মন্থন অ্যাওয়ার্ড, ২০১৬ গ্লোবাল এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ সামিট, গ্লোমো অ্যাওয়ার্ড এবং দ্য কুইনস ইয়ং লিডার্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে।

মন্তব্য করুন

নীচের ফর্মে আপনার মন্তব্য যোগ করে টেক্সট লিখুন। একজন মডারেটর মন্তব্য সমূহ এপ্রুভ করে থাকেন এবং সঠিক সংবাদর নীতিমালা অনুসারে এডিট করে থাকেন। সঙ্গে সঙ্গে মন্তব্য প্রকাশ হয় না, প্রকাশিত কোনো মতামতের জন্য সঠিক সংবাদ দায়ী নয়। অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন এবং বিষয় বস্তুর প্রতি আবদ্ধ থাকুন।