উগ্রবাদে জড়িত সন্দেহে গাজীপুরে আরও ৫ যুবক গ্রেপ্তার
2016.11.02

গাজীপুরে গোপন বৈঠকের সময় আরও পাঁচ যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাঁদের জঙ্গি বলে সন্দেহ করা হলেও সাংগঠনিক পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। তবে জেলা পুলিশ বলছে, জঙ্গি দমনে গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত থাকবে।
ঢাকার পাশ্ববর্তী এই জেলা থেকে চার হুজি (হরকাতুল জিহাদ) সদস্যকে গত ২৮ অক্টোবর আটক করেছিল জেলা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক গ্রুপ। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে একটি জঙ্গলের ভেতর সুফিয়া কটেজের পরিত্যক্ত ভবনে তারা গোপন বৈঠক করছিল বলে পুলিশের দাবি।
গত মঙ্গলবারও গভীর রাতে কুচপাড়া শালবন এলাকায় এমন বৈঠক চলার খবর জানতে পারে পুলিশ। এরপর সেখানে অভিযান চালিয়ে হাতবোমা, ধারালো অস্ত্র ও উগ্র মতবাদের বইসহ এই পাঁচ যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।
এঁরা হলেন; বগুড়া সদরের কাউসিল পাড়ার তানভীরুল হক সজল (২৩), কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের হারুন মিয়া (৩৭), একই এলাকার মো. হোসেন (২৯), দ্বীন ইসলাম (৩৫) ও আব্দুল হান্নান (৩৫)।
“তাদের বিরুদ্ধে জয়দেবপুর থানায় বিস্ফোরক ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দুটি মামলা হয়েছে,” বেনারকে জানান জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার রেজাউল হাসান।
পুলিশ জানায়, ওই অভিযানে পাঁচটি পেট্রোল বোমা, ছয়টি হাতবোমা, একটি চাপাতি, দুটি ছোরা, বেশকিছু জিহাদি বই ও দুটি পতাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
“নাশকতা পরিকল্পনা করতে কুচপাড়ায় একটি বৈঠক চলার গোপন খবর পেয়ে পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স রাতে সেখানে অভিযান চালায়। এসময় ওই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়,” বেনারকে জানান গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে তাদের সাংগঠনিক পরিচয় জানা যাবে।
গতকাল গাজীপুর পুলিশ সুপার মো. হারুন অর রশীদ তার কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ–সংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জঙ্গিরা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালাতে একত্রিত হয়ে শলাপরামর্শ করছিল।
ব্রিফিংয়ের সময় আসামিদের হাতে ছিল হাতকড়া, মাথায় ছিল হেলমেট। তাদের পরনে ছিল পুলিশের বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট।
জেলা শহরের একজন ব্যবসায়ি শফিকুল ইসলাম বেনারকে বলেন, জঙ্গি দমন অবশ্যই করতে হবে। পুলিশ সেই চেষ্টা করছে। তবে এ ধরনের অভিযান আরও স্বচ্ছ হওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে নিরীহ কেউ যাতে ঘটনা বা পরিস্থিতির স্বীকার না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
জেএমবি নেতা খামারু রিমান্ডে
রাজশাহীর বাগমারা থানায় বিস্ফোরক মামলায় জেএমবি নেতা বাংলাভাইয়ের সহযোগী মাহাতাব খামারুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গতকাল বুধবার চারদিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। দুপুরে রাজশাহীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. সাইফুল ইসলাম তাকে রিমান্ডে পাঠানোর এ আদেশ দেন।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর বাগমারার তালঘরিয়া এলাকা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। গত ১৩ জুন বাগমারার শিকদারী বাজারে চারটি বোমার বিস্ফোরণের ঘটে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ।
“জেএমবি নেতা সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলাভাইয়ের অন্যতম সহযোগী খামারুর বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতিসহ বিভ্ন্নি অভিযোগে আরও চারটি মামলার বিচার চলছে,” বেনারকে জানান বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেলিম হোসেন।
পুলিশ জানায়, মাহাতাব বাগমারার তালঘরিয়া গ্রামের মো. আলী খামারুর ছেলে। তিনি তালঘরিয়া হাইস্কুলে শিক্ষকতা করতেন।